দেশের বর্তমান পরিস্থিতে সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আসলে তা কতটা যৌক্তিক এবং জনগণ এ ব্যাপারে কি ভাবছে? সরকারের পুরো অভিপ্রায় বিশ্লেষণ করতে গেলে সংক্ষেপে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যাক একটু।
১। ১৯৭২, জামায়াতকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের সাধারণ ক্ষমাঃ
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর জামায়াতকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে দেশ পরিচালনা করতে গিয়ে শেখ মুজিব পর্যবেক্ষণ করেন, তার সরকারের অনেকেই পাকিস্তানপন্থী এবং অপরদিকে জনগণের মনে স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতি তীব্র ঘৃণা রয়েছে। এরকম একটা অস্বস্তিকর বৈপরীত্য অবস্থা এড়াতে, তিনি স্বাধীনতা বিরোধীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন।
২। রক্ষীবাহিনী নিয়ে ধারণা ও মুজিবকে ভারতের দালাল অপবাদঃ
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন প্রবাসী সরকার প্রধান তাজউদ্দীন আহমেদ ভারতের সাথে যে ভয়ংকর চুক্তি করে বসেছিলেন, শেখ মুজিব যথেষ্ট চেষ্টা করেন সেই ইমেজ থেকে বের হয়ে আসতে এবং তারই একপ্রকার ধারাবাহিকতায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর শেষ দল ১৯৭২ এর মার্চে বাংলাদেশ ত্যাগ করে।
৭১ এ পাকিস্তানীরা এবং ৭২ এর শুরুতে সকল ভারতীয় সৈন্য চলে যাওয়ার পর একটা বাহিনীর শুন্যতা এবং যুদ্ধশেষে অনেকেই অস্ত্র জমা না দেয়ায় একটা বিপদজনক অবস্থার সৃষ্টি হয়। সেইসাথে বিপুলসংখক তরুন মুক্তিযোদ্ধাদের কর্মসংস্থানের জন্য ১৯৭২ এর শুরুতে আর্মড পুলিশ এক্ট সংশোধন করে মুজিব একটি আধা-সামরিক “জাতীয় রক্ষীবাহিনী” গঠন করেন। তবে অনেকের তীব্র অভিযোগ রয়েছে রক্ষীবাহিনী মূলত আওয়ামি লীগের রাজনৈতিক পেটোয়া বাহিনী ছিলো এবং দেশ গঠনের চেয়ে রক্ষীবাহিনীকে শেখ মুজিব ও আওয়ামী সমালোচকদের বিরূদ্ধেই বেশি ব্যবহার করা হয়েছিলো। এ কথা বলে নেয়া ভালো যে, ৭৫ এর মুজিব হত্যার সাথে যারা জড়িত ছিলেন,তারা ঐসময় এরকম প্রচার চালান রক্ষীবাহিনী আসলে ভারতীয় বাহিনীর ইউনিফর্মে ভারতীয় সৈন্য এবং শেখ মুজিব একজন ভারতের দালাল। যাই হোক, ১৯৭৪ এ লাহোরে OIC (Organization of Islamic Conference) সম্মেলনে শেখ মুজিবের যোগ দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন এবং তাতে এটাই অন্তত প্রমাণিত হয় যে বাহ্যিকভাবে হলেও শেখ মুজিব এই প্রচার বা অপ্রপ্রচারের ব্যপারে জ্ঞাত ছিলেন এবং তিনি তা পছন্দ করছিলেন না।
৩। ১৯৭৫, মুজিব হত্যাঃ
শেখ মুজিবকে দেশ পরিচালনায় অক্ষম ও দুর্নীতিবাজ নানা অভিযোগে যুক্ত করে একটি বাহিনী ৭৫ এ শেখ মুজিবকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং এই হত্যার পেছনে ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় সেনাবাহিনীর একটি বড় অংশেরই সমর্থন ছিলো এবং তারা ইমডেমনিটি জারি করে মুজিব হত্যার কোন বিচার করা যাবে না।
৪। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আগমন কার হাত ধরে?
১৯৭৫ সালে শেখ মুজিব হত্যাকান্ডের পর উচ্চাভিলাসী মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র চর্চার দুয়ার উন্মুক্ত করেছেন দাবী নিয়ে, তথাকথিত এক গণভোটের আয়োজনে নিজেকে নিজেই বৈধতা দেন এবং ক্ষমতায় এলে জামায়াতের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেন। এবং ১৯৭৯ সালের মে মাসে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়।
৫। জামায়াতের রাজনৈতিক চর্চা ও প্রধান দুটি দলের সাথে জোট গঠনঃ
১৯৮১ সালের ৩০শে মে জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ডের পর এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণ করে দেশে সামরিক আইন জারি করেন। ১৯৮৩ সালের ২০ নভেম্বর জামায়াতের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত আমীর মরহুম আব্বাস আলী খান এরশাদ সরকারকে অবৈধ ঘোষনা করেন এবং তাতে সাড়া দিয়ে ১৯৮৩-১৯৯০ সাল পর্যন্ত বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ৮ দল ও ৭ দলীয় জোট জামায়াতে ইসলামীর সাথে সমন্বয় করে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়। ১৯৮৬ সালে এরশাদের পাতানো নির্বাচনকে বিএনপি প্রত্যাখান করলেও আওয়ামী লীগ ও জামায়াত একসাথে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং সংসদেও যোগ দেয়।
৬। জামায়াতের সাথে আওয়ামী সখ্যতা ও সম্পর্কের ভাঙনঃ
এরশাদ ১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর পদত্যাগ করতে বাধ্য হলে ১৯৯১ সালের যে নির্বাচন হয়, তাতে আওয়ামী লীগের জয়লাভের প্রবল আত্মবিশ্বাস থাকলেও বিএনপি জয়লাভ করে এবং সরকার গঠনে জামায়াত বিএনপিকে সমর্থন দিলে আওয়ামী লীগ ক্ষুব্ধ হয় জামায়াতের উপর। তবুও রাষ্ট্রপতি পদ প্রার্থনায় আওয়ামী নেতাদের গোলাম আজমের সাথে সাক্ষাত, এবং জামায়াতকে পক্ষে আনার জন্য আওয়ামী নেতাদের জামায়াতের সাথে নানা মধুর সম্পর্ক দেখা যায়। যেমন শেখ হাসিনা গোলাম আযমকে তসবিহ, জায়নামাজ ও কোরআন শরীফ উপহার দিয়ে দোয়া নেন এবং অসুস্থ মতিউর রহমান নিজামিকে দেখতে তিনি তার ভাই শেখ সেলিমকে পাঠান।
৭। জামায়াতের ফুলে ফেঁপে ওঠার কালঃ
১৯৯৬ সালে নির্বাচনে জয় লাভ করতে আওয়ামী লীগ জামায়াতের সাথে জোট গঠন করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ১৪৬ টি আসন পেয়ে জয়লাভ করায় সরকার গঠনে আর জামায়াতকে গ্রহণ করেনি। ২০০১ জামায়াত বিএনপির সাথে মিলিত হয়ে চারদলীয় ঐক্যজোট গঠন করে নির্বাচনে জয়লাভ করে, নিজামীকে কৃষিমন্ত্রী ও আরও ১৬ জনকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয় এবং সেটাই মূলত জামায়াতকে ফুলে ফেঁপে ওঠার সুযোগ দেয়।
৮। পিলখানা হত্যাকান্ড, সেনাবাহিনীর ভূমিকা ও পুলিশ কি পেটোয়া বাহিনী?
২০০৮ সালের আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণ করলে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা পিলখানায় যে নারকীয় হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়, সেটা ইতিহাসের আরেক পুনরাবৃত্তি যেন। অনেক রাজনৈতিক বোদ্ধার ধারণা- সরকার এটিকে বিডিআর বিদ্রোহ বললেও যেভাবে ১৯৭৫ এ চেইন অফ কমাণ্ড ভেঙ্গে জুনিয়র অফিসাররা মুজিব হত্যায় অংশ নিয়েছিল, সেনাবাহিনীর সেইরকম একটা রিভোল্টের আশংকা থেকেই শেখ হাসিনা এ বিএনপিপন্থী বা সরকার বিরোধী মনোভবের সকল অফিসসারদের বড় অংশকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন যেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার মতো কোন শক্তি আর অবশিষ্ট না থাকে।
তবে এর সত্য মিথ্যা আজও বাংলাদেশবাসী জানতে পারেনি। তবে যে কোন নির্বাচনে, আন্দোলনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিরপেক্ষতা বর্তমানে সত্যিই প্রশ্নবিদ্ধ। একাত্তরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে অদম্য সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিল, এখন সেখানে অনেকটাই বৈপরীত্য। সমালোচকদের মতে, সেনাবাহিনী এখন যেন একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বড়সড় গোছের রিয়েল এস্টেট এজেন্সি। ঊর্ধ্বতন অফিসাররা এসব নিয়েই ব্যস্ত আর জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ বাহিনীর গত ১৫ বছর যে ভূমিকা, তাতে অনেক আওয়ামী বিরোধীরাই ব্যাঙ্গ করে আওয়ামী রক্ষীবাহিনীর সাথে তুলনা করেন।
৯। আওয়ামী-জামায়াত এর বন্ধুত্বে কেন বৈরিতা এবং এই মুহুর্তে জামায়াত নিষিদ্ধ করা কি ক্ষমতায় টিকে থাকার একটি কূটকৌশল?
উপরের পয়েন্ট ৫ ও ৬ থেকে এ কথা পরিষ্কার ক্ষমতার তীব্র ক্ষুধা নিবৃত্ত করতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই একই সময় জামায়াতকে সমর্থন করেছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলেও তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেনি! এবং সরকার তার দ্বিতীয় মেয়াদে তড়িঘড়ি করে ২০১২ সালে যুদ্ধপরাধের বিচার শুরু করে যেটাকে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক সরকারের পরবর্তী মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার একটি কৌশল বলে থাকেন। এবং যুদ্ধপরাধের নাটের গুরুকে তার বার্ধক্য জনিত কারণ দেখিয়ে সাজা থেকে অব্যহতি এটাও এই বিচারব্যবস্থাকে অনেকের দৃষ্টিতে প্রশ্নবিদ্ধ করে। যুদ্ধপরাধের বিচার সরকারের একটি প্রশংসাযোগ্য কাজ কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায় আওয়ামীলীগ ১৯৯৬ সালের শাসনে কেন জিইয়ে রেখেছিলো এই বিষফোঁড়া এবং এই ফোঁড়াকে বাড়তে দিয়ে পরবর্তী মেয়াদের ১৫ বছরে অপসারণ না করে এখনই বা তাকে ক্যান্সার হিসেবে ঘোষণা করছে।
এর পিছনের কারণ অতি সুস্পষ্ট- জামাত-শিবির ট্যাগ দেওয়া তাদের অন্য প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার মোক্ষম অস্ত্র এবং একটি রাজনৈতিক কূটকৌশল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে গত এক দশকে সরকার যেভাবে যে কোন বিরোধী মনোভাবকেই দমন করতে রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী ট্যাগ দিয়েছে সেটা রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় বহন করেনা এবং বর্তমানে জনগণের কাছে এই পুরোনো চর্বিত চর্বন পুরোপুরি বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য। সুতরাং এ কথা পরিস্কার এই ‘জামায়াত নিষিদ্ধ’, যুদ্ধাপরাধের প্রলম্বিত বিচার সরকারের ক্ষমতায় থাকার এবং গণতন্ত্রের নাম ভাঙিয়ে স্বৈরাচারিতার একটি চরম কূটকৌশল। অনেকেই মনে করেন আওয়ামী সরকার নিজেই মুক্তির চেতনাকে আর ধারণ করে না বরং সময়ের সাথে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সুবিধাভোগী বলে তাদেরকে প্রতীয়মান হয়।
১০। এই মুহুর্তে ‘জামায়াত নিষিদ্ধ করা’- তাসের আরেকটি গুটি:
একাত্তরে যে জাতিভিত্তিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে,তাতে এখানে ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল পরিচালনার সুযোগ নেই। কিন্তু এই আলোচনা বা মতামতের সময় এটি নয়।
এই মুহুর্তে জামায়াত নিষিদ্ধ করা এবং ছাত্রদের নির্দোষ আন্দোলন দমনে আন্দোলনকারীদের জামায়াত শিবির এই ট্যাগটি ব্যবহার সরকারের আরেকটি তাসের গুটি ছাড়া কিছুই নয়। সেই সংগে জামাত কে সত্যি সত্যি উষ্কে দিয়ে আন্দোলনে নামাতে পারলে জংগী ট্যাগ দিয়ে উদ্ভুত গণআন্দোলন নস্যাত করার এটি আরেকটি চাল মাত্র। আর তাছাড়া প্রত্যেকটি কাজের তো ধারাবাহিক প্রক্রিয়া থাকে। আইনমন্ত্রী যেটি বলেছেন- জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি আদালতে আবেদনের মাধ্যমে হতে পারে, আরেকটি বিকল্প হচ্ছে, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে হতে পারে পরে। অথচ ২৬৭ টি লাশের বিচার নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই!
বাংলাদেশের তরুণ যারা শাহবাগ আন্দোলন বা সড়ক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তারা ধর্মভিত্তিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তাই মৌলবাদীদের আধিপত্যের একেবারেই অমূলক।
১১। জনগণ চায় গনহত্যার বিচার, সরকার পতন ও তরুণরা কি চায়?
১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান যেটা গোটা বাংলাদেশটার গোঁড়াপত্তন করেছিল সেখানেও এতো জন মারা যায়নি। নব্বইয়ের গন অভ্যুত্থান যেখানে নূর হোসেন সহ চারজনের মৃত্যু এরশাদ সরকারের পতন ঘটায়। পৃথিবীর আর কোথাও কোন আন্দোলনে এতো মৃত্যুর মিছিল, এতো নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ঘটেনি।
২৬৭ টি প্রাণ কেড়ে নেয়া- এটা সুস্পষ্ট ভাবে গণহত্যা, এটা এক ধরণের বুদ্ধিজীবী হত্যা। সরকার কি আদৌ বুঝতে পারছে তারা কি করছে? রাষ্ট্রীয় বাহিনী দ্বারা কতটা নৃশংস এলোপাথাড়ি গুলি চালালে ঘরের ভিতর শিশুর মৃত্যু হতে পারে, তাই এই গণহত্যার বিচার সবচেয়ে জরুরী। অনেকের মতে, সরকার প্রধানের সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে ক্যাবিনেটসহ পদত্যাগ অতীব জরুরী। অন্যথায় প্রতিটি মানুষের রক্তে আজ এই যে প্রতিবাদের আগুন তা আরো ক্ষয়ক্ষতি ডেকে আনবে। অনেকে যারা রাষ্ট্রের অধীন ভৃত্য, প্রতিদিনের সরকারি বাহিনীর দ্বারা গ্রেফতার, নিখোঁজ এসবের ভয়ে চুপ আছেন কিন্তু তারাও চাইছেন এই ফ্যাসিবাদের পতন। এই সুস্পষ্ট গণহত্যার বিচার চাওয়া কোনভাবেই স্বাধীনতা বিরোধীদের সমর্থন দেওয়ার সাথে সম্পর্কিত নয়। যে সরকার তার নিজ জনগণের রক্তের দাম দিতে জানেনা, তাদের হাতেই জনগণের ভার এ এক অবান্তর যুক্তি।
তাই সরকারের উচিৎ পূর্বে ব্যবহিত এই জামায়াত শিবির নাটক বন্ধ করে স্বেচ্ছায় ক্ষমতা সেনাবাহিনীর হাতে পদার্পন এবং পদত্যাগ। সেনাবাহিনীর শাসনকালে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বাংলাদেশের তরুনেরা পুরনো পিতৃতান্ত্রিক রাজনীতি বদলে যে বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখে, সেই নেতৃত্ব গঠনের সময় তারা হাতে পাবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমা চেয়ে ক্ষমতা থেকে নেমে যাক। তাদের দলের সংস্কার করুক। গণতান্ত্রিক উপায়ে নতুন নির্বাচন হোক।
পরিশেষে, রাষ্ট্রকে এখন বলা যায় সে প্রসবাসন্ন অন্তঃস্বত্ত্বা নারী। একজন অন্তঃস্বত্ত্বা নারীর জন্য যেমন দুটি পথ খোলা। এক, স্বাভাবিক ভাবে সুস্থ সন্তান জন্মদানের চেষ্টা করা নয়তো সন্তানকে হত্যা করে গর্ভাবস্থা থেকে মুক্তি। মা যদি সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে হত্যা করে, তবে সেখানেই মায়ের নিজেরই মৃত্যু ঝুঁকি থাকে, তাই এ ছাত্রদের এ দুর্বার আন্দোলনকে, নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নকে দমনের কোন সুযোগ নেই, তাতে সরকার একটি মৃত্যু কুপ খুঁড়বে নিজের জন্য। চীনের ঋন বন্ধ, আই এম এফ এর সাথে চুক্তি বাতিল হয়েছে এবং আগামীতে ঝুঁকিপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্কের আশংকা সে কথাই বলছে।
রেফারেন্সঃ
১। এরশাদের পতন ও শাহাবুদ্দিনের অস্থায়ী শাসন, মেজর জেনারেল মনজুর রশীদ
২। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, শেখ মুহাম্মদ ইব্রাহীম
৩। জাসদের উত্থান পতন, মহিউদ্দিন আহমদ
৪। বিএনপি সময় অসময়, মহিউদ্দিন আহমদ
৫। https://www.jamaat-e-islami.org/article-details.php?category=73&article=214
ইংরেজি ভার্সন দেখতে চাইলেঃhttps://truthcastbd.com/2024/07/31/analyzing-jamaat-ban-31-luly-2024/
[…] To read this article in Bengali:https://truthcastbd.com/2024/07/31/jamaat-e-islami-ban/ […]